#তোমাকে__প্রয়োজন💔
#Written__by__Hiya_Chowdhury❣
#Part__04
সাইমা প্রীতির রুমে আসে দেখে প্রীতি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।সাইমা ও প্রীতির পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। প্রীতি পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে সাইমা এসেছে।
প্রীতিঃ সাইমা কিছু বলবে?
সাইমাঃ হুম আপু তোমার মন খারাপ?
প্রীতিঃ কই নাতো।
সাইমাঃ নাহ্ আপু অবশ্যই তোমার মন খারাপ। কেননা তুমি আগের সেই চঞ্চল মেয়ে প্রীতির মতো নও। কেমন যেনো চুপচাপ হয়ে গেছো। কিছু কি হয়েছে আপু?
প্রীতিঃ নাহ্ কি হবে এমনি তে ভালো লাগছে না তাই চুপচাপ আছি।😐
সাইমাঃ ওহ্ বুঝেছি মামা আর মামনির জন্য মন খারাপ। আহা আপু এতো মন খারাপ হলে চলে? নিয়মিত কথা হলে দেখবা মন ভালো হয়ে যাবে।
প্রীতিঃ হুম। আচ্ছা সাইমা তুমি তো এবার ইন্টার ২য় বর্ষে তাই না?
সাইমাঃ হুম। আপু I am so happy.. এবার থেকে তুমি আর আমি একসাথে যেতে পারবো।
প্রীতিঃ হুম।
সাইমাঃ আচ্ছা আপু আর মন খারাপ করো না কেমন। দেখবা ভাইয়া তোমার জন্য কি এনে রেখেছিলো।
প্রীতিঃ কি?
সাইমাঃ ওয়েট...
সাইমা গিয়ে একটা সুন্দর teddy নিয়ে আসে। Teddy টার হাতে একটা ফুল ও রয়েছে। যেনো মনে হচ্ছে প্রপোজ করছে এমন। প্রীতি পিক করে হেসে দেয়। শান্ত ওর পছন্দের জিনিস গুলো বরাবরের মতোই মনে রেখেছে। এটা ভাবতেই প্রীতির কেমন যেনো হাসি পাচ্ছে। প্রীতি ভাবে হয়তো শান্ত তাকে সাইমার মতোই ছোট বোন ভেবে এসব করছে। কিন্তুু আদৌ কি প্রীতির ভাবনা সত্যি?
পিয়াস মানহা কে কিছুক্ষন পড়ায় এক্সাম এর জন্য important কিছু পড়া গুলা। মানহা পড়ছে কম দুষ্টুমি করছে বেশি।
সবাই একটা সময় যখন ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রীতির চোখে ঘুম নেই। কান্না থামেই না তার। প্রীতি সাইমার সাথে শুয়েছে। সাইমা সেই কখন ঘুমিয়ে গেছে প্রীতির ঘুম ই আসছে না। কিছু সময় পর প্রীতি কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো নিজেই জানে না।
শান্ত.......!
হ্যাঁ শান্তর চোখে ও ঘুম নেই। তার মায়াবতী কে দেখতেই হবে এখন তার। না হয় ঘুম আসবে না। শুয়েছে বাট ঘুমের ছিটেফোটা ও নেই। উঠে রুমের মধ্যে পায়চারী করছে শান্ত।
ভাবছে সাইমার রুমে যাবে কিনা। যদি প্রীতি জেগে থাকে তাহলে শান্ত কে দেখলে তো উল্টা পাল্টা ভাববে তখন? নাহ্ যা হবে হোক। প্রীতি কে একটা বার দেখতেই হবে ঘুমানোর আগে।
শান্ত পা বাড়ায় সাইমার রুমের দিকে। রুমের দরজা খোলা ই থাকে। দরজার সামনে এসে ভাবছে রুমে ঢুকবে কি ঢুকবে না? শান্ত সাইমার রুমে প্রবেশ করলো। ড্রিম লাইটের মিটমিট আলোয় শান্তর চোখ যায় প্রীতির দিকে। শান্ত দেখে প্রীতি আর সাইমা দু-জন ই ঘুমিয়ে গেছে। শান্ত হা হয়ে প্রীতির দিকে তাকিয়ে আছে।
এ যেন এক ঘুমন্ত পরী। চুল গুলো এ পাশে ছেড়ে দেওয়া। সব মিলিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রীতি কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। শান্ত ইচ্ছে করছে প্রীতির কপালে ভালোবাসার ছোট একটা পরশ একে দিতে কিন্তুু নাহ্ সেটা শান্ত করবে না।
মন ভরে প্রীতির ঘুমন্ত চেহারা টা দেখে শান্ত নিজের রুমে চলে যায়। বুনতে থাকে প্রীতি কে নিয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন। ভালোবাসার মানুষ গুলো পাশে থাকলে হয়তো এমন ই অনুভূতি হয় যেটা এখন শান্তর হচ্ছে।
whatever শান্ত ও ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল ৯:৩০ বাজে___________
শান্তর আব্বু আম্মু আর সাইমা নাস্তার টেবিলে বসে আছে। কারণ কিছুক্ষন পর ই শান্তর আব্বু কে বেরোতে হবে অফিসের উদ্দেশ্য,,,সাইমা কলেজের আর শান্ত ভার্সিটির কিন্তুু আজকে শান্ত যাবে না ভার্সিটি তে,,, প্রীতি কে কলেজে Admission করতে হবে।
প্রীতির ফুপুনিঃ কিরে সাইমা তুই প্রীতি কে ডাকিস নি?
সাইমাঃ হ্যাঁ আম্মু ডাকছি তো কিন্তুু আপুর তো কোনো রেসপন্স পাচ্ছি না। 😔 আজকে আপুর Admission করার কথা।
প্রীতির ফুপুনিঃ ওহ্ আচ্ছা ঠিক আছে আমি গিয়ে দেখছি।
প্রীতির ফুপাঃ ডেকে দাও মামনি টা কে। ১০ টা বাজতে চললো প্রায়।
শান্ত কিছু বলছে না চুপচাপ আছে। কারণ ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আসার আগে সে সাইমা নিচে যাওয়ায় তার ঘুমে বিভোর থাকা মায়াবতী কে দেখে নিয়েছে।😍
প্রীতির ফুপুনি প্রীতি কে ডেকে ঘুম থেকে তোলে। এন্ড ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতে বলে।তিনি নিচে চলে আসেন।
প্রীতি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে কোনো ভাবে রেডি হয়ে নেয়। তারপর নিচে আসে।
শান্ত সাইমা & প্রীতির ফুপাঃ Good Morning☺
প্রীতিঃ Good morning....😊
তারপর সবাই মিলে নাস্তা করে নেয়।
সাইমাঃ আপু তুমি রেডি?
প্রীতিঃ হু
সাইমাঃ এভাবে তুমি কলেজে যাবে?
প্রীতিঃ হ্যাঁ কেনো কি হয়েছে?😟
সাইমাঃ একদম ই না এদিকে আসো।
সাইমা প্রীতিকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে আটা ময়দা দিয়ে একদম ময়দাবতী নিয়ে দিলো।😛 প্রীতি সাইমার কান্ডে থ হয়ে গেলো। এতো সাজ আগে কখনো সেজেছে বলে তার মনে হয় না।
সাইমাঃ Wow fantastic আপু😍😍 আজ কে কতো ছেলে যে তোমার উপর ক্রাশ খাবে উফফ কি বলবো😘😘
প্রীতিঃ এসব কি বলো😒
সাইমাঃ হ্যাঁ আপু সত্যি অসাধারন লাগছে তোমাকে। ইশ আমি যদি ছেলে হতাম সবার আগে তোমার প্রথমে আমি ই পড়তাম। 😌
প্রীতিঃ😲
সাইমাঃ চলো চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে।
প্রীতিঃ হু।
সাইমা আর প্রীতি তার ফুপুনির থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে আসে। শান্ত গাড়িতে বসে আছে।সাইমা আর প্রীতি এসেই পেছনের সিটে বসে যায় এমন সময়।
শান্তঃ কিরে আমি কি তোদের ড্রাইভার নাকি?😓
সাইমাঃ ওমা তুই আমাদের ড্রাইভার কেনো হয়ে যাবি ভাইয়া?
শান্তঃ তাহলে ২ জন পেছনের বসছিস যে?
সাইমাঃ আমি বাবা সামনে সিটে বসে পারবো না আপু তুমি গিয়ে বসো।
প্রীতিঃ আআআআআ আমি?
সাইমাঃ আরে যাও তো।
সাইমা জোর করেই প্রীতি কে শান্তর পাশের সিটে বসিয়ে দেয়। শান্ত হা হয়ে গেছে প্রীতির দিকে তাকিয়ে। একটা মেয়ে আর কতোটা সুন্দর হয়ে পারে তার জানা নেই।
প্রীতি সেজেছে এটা শান্তর ভালো লাগলো না। কারণ যে কেউ ই প্রীতির জন্য পাগল হয়ে যাবে। শান্ত চায় প্রীতি শুধু তার জন্যই সাজবে কিন্তুু..!
শান্তঃ প্রীতি..!
প্রীতিঃ হ্যাঁ ভাইয়া?
শান্তঃ এতো আটা ময়দা লাগিয়েছো কেনো?
প্রীতিঃ কিহ্্্্্্ 😤😤
সাইমাঃ এই ভাইয়া একদম উল্টা পাল্টা কথা বলবি না। এগুলো কে মেকআপ বলে আটা ময়দা না বুঝলি?😠😈
শান্তঃ ওমা তুই ও তো দেখো ময়দা সুন্দরী😂
সাইমাঃ ভাইইইইইইয়া😠😠
শান্তঃ 😁😂
শান্ত উপরে উপরে হাসলে ও ভিতরে ভিতরে প্রীতির উপর রেগে আছে। কোনো ছেলে প্রীতির দিজে নজর দিকে এটা সে চায় না। প্রীতি শুধু শান্তর। আর কারো না। কিন্তুু এখন প্রীতি কে সাজতে যে নিষেধ করবে এমন অধিকার ও তার নেই। তাই কিছু করার ইচ্ছে থাকলে ও উপায় নেই।
প্রীতির মন খারাপ এটা বেশ লক্ষ্য করছে শান্ত। কিন্তুু বুঝতে পারছে না তার এখন কি করা উচিত।
পিয়াস ঘুম থেকে উঠে একটু হাটাহাটি করে আসে। কেনো যেনো মন টা খারাপ হয়ে আছে তার। হঠাৎ ই হ্যাড স্যারের ফোন। কলেজে কিছু important ক্লাস করা প্রয়োজন তার। ছুটি নেয়া সত্ত্বে ও এখন যেতে হবে তার।
whatever কলেজ থেকে পিয়াসের ফুপির বাসা খুব বেশি একটা দুরে নয়। মানহা স্কুলে চলে যায়। আর পিয়াস কলেজে চলে আসে। কলেজ শেষ করে আবার ফুপির বাসায় চলে যাবে।
পিয়াস কে কলেজে আসতে দেখে রিতু বেশ খুশি। লাইক করে বলে কথা। রুহী আর রিদিতা পিয়াস কে দেখেই ঘৃণা হচ্ছে কেননা এই মানুষ টার জন্যই তাদের ফ্রেন্ড প্রীতি আজ তাদের থেকে অনেক টা দুরে।
পিয়াস ক্লাসে এসে অবাক। আজকে ও প্রীতি ক্লাসে অনুপস্থিত। রুহী আর রিদিতা কে উদ্দেশ্য করে পিয়াস বলে ।
পিয়াসঃ কাল থেকে ক্লাসে কেউ অনুপস্থিত থাকলে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
রহী আর রিদিতা বেশ বুঝতে পারছে কথা টা কার জন্য ছিলো। হয়তো প্রীতি কে এমন অপমানের পরে ও পিয়াসের শখ মিটে নি এমন টা ভাবছে তারা।
আজকে হঠাৎ ই পিয়াসের কেনো যেনো প্রীতির উপর ওই দিনের ব্যবহারের জন্য খারাপ লাগছিলো। আর যাই হোক এতো গুলো Students এর সামনে এভাবে অপমানের করা তার ঠিক হয় নি। তবে হ্যাঁ সে প্রীতি কে বুঝিয়ে ও বলতে পারতো। প্রচন্ড রকমের অনুতপ্ত বোধ করছে পিয়াস।
ক্লাস শেষ করে পিয়াস রুহী কে আর রিদিতা কে ক্লাসে বাইরে ডাকে। রুহী আর রিদিতা থতমত খেয়ে যায়। না জানি আজকে ওদের কপালে কি আছে...?
রিতু-শিলা-নিপা এরা ৩ জন ভাবছে আজকে হয়তো রুহী আর রিদিতা কে পিয়াস বকবে।কারণ ক্লাসে ওদের মনোযোগ ছিলো না।ভয়ে ভয়ে রুহী আর রিদিতা পিয়াসের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
রহীঃ জ্বী স্যার আমাদের ডেকেছেন?
পিয়াসঃ হ্যাঁ। তোমাদের সাথের আরেক জন কোথায়?
রিদিতা আর রুহী এক জন আরেক জনের দিকে তাকায়।
রিদিতাঃ স্যার প্রীতির কথা বলছেন?
পিয়াসঃ হ্যাঁ।
রুহী আর রিদিতা পিয়াসের উওর পেয়ে চুপ করে আছে।
পিয়াসঃ কি হলো আমার প্রশ্নের উওর দাও?
রহীঃ স্যার ওর কথা আপনাকে বলতে আমরা বাধ্য নই। (নিজে সাহস নিয়ে)
রিদিতাঃ মাফ করবেন।
এ কথা টি বলে রুহী আর রিদিতা সোজা কলেজ থেকে বেরিয়ে যায়। এমনি তে মন খারাপ। তার উপর পিয়াসের প্রীতির কথা জিঙ্গেস করায় মুড আরো খারাপ হয়ে গেছে।পিয়াস কিছুই বুঝতে পারলো না। হঠাৎ ওদের ২ জনের কথা এমন হয়ে গেলি কেন? সব কিছু যেনো পিয়াসের মাথার উপর দিয়ে গেলো...!!
কলেজে চলে আসায় শান্ত গাড়ি থামায়। প্রীতি আর সাইমা গাড়ি থেকে নেমে আসে। শান্ত ও গাড়ি থেকে নামে।
সাইমাঃ চলো ভিতরে যাওয়ার যাক?
প্রীতিঃ হু।
হঠাৎ ই শান্তর ফোন বেজে ওঠে। সাইমা আর প্রীতি আবার দাঁড়িয়ে যায়।
শান্তঃ তোমরা এগিয়ে যাও আমি আসছি ২ মিনিট।
সাইমা & প্রীতিঃ ওকে।
প্রীতি আর সাইমা কলেজে ঢুকতেই প্রীতির সাথে রাহুলের ধাক্কা লাগে। প্রীতি পড়ে যেতেই রাহুল তাকে ধরে ফেলে। প্রীতি চোখ বন্ধ করে ফেলে।
মুগ্ধ নয়নে প্রীতির দিকে তাকিয়ে আছে রাহুল। নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে আসে মাশাআল্লাহ...!!😍
#To_be_continue