#তোমাকে__প্রয়োজন💔
#Written__by__Hiya_Chowdhury❣
#Part__05
মুগ্ধ নয়নে প্রীতির দিকে তাকিয়ে আছে রাহুল। নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে আসে মাশাআল্লাহ।
প্রীতি দ্রুত সরে দাঁড়ায়। রাহুল হা করে তাকিয়েই আছে।
প্রীতিঃ I am sorry...আমি আসলে খেয়াল করি নি।
প্রীতি আর সাইমা দেখে ছেলেটির কোনো রেসপন্স নেই। তাই প্রীতি আর সাইমা সামনে দিকে চলে যায়। কিছুদূর গিয়ে সাইমা প্রীতিকে বলে।
সাইমাঃ আপু..!
প্রীতিঃ হু।
সাইমাঃ মনে হয় ক্রাশ খাইছে?😁😁
প্রীতিঃ আরে না এসব কি বলো😐
সাইমাঃ😂😂
শান্ত ও ততক্ষনে কথা বলা শেষ করে চলে আসে। ভাগ্য ভালো যে প্রীতি আর রাহুলের ব্যাপার টা শান্ত দেখে নি। নয়তো রাহুলের অবস্থা সিরিয়াস করে ছাড়তো শান্ত। কারণ প্রীতির পাশে কেউ ঘুরতে ও পারবে না। ব্যাচ.....
শান্ত প্রীতি কে নিয়ে Admission করাতে চলে যায়। আর সাইমা নিজের ক্লাসে যায়।
রাহুলের ফ্রেন্ডস রা____________
রিফাতঃ কিরে রাহুল এভাবে হা করে আছিস কেনো?
রাহুলঃ পরী দেখেছি😍
সজীবঃ এই তোর মাথা ঠিক আছে তো কি বলছিস এসব?
আবিরঃ এই রাহুল কি হলো তোর আবার? কি সব উল্টা পাল্টা বলছিস? এখানে পরী আসবে কই থেকে?😒
রাহুলঃ তোরা বিশ্বাস কর। এতো সুন্দর মেয়ে এর আগে আর কখনো আমি দেখেনি। উফ বুকের নাম পাশ টায় এই মেয়ে জায়গা নিয়ে ফেলেছে রে।😍
রিফাতঃ এই রাহুল তুই ঠিক বলছিস তো?😲
আবিরঃ যে ছেলে মেয়েদের দিকে ভুল করে ১ বার তাকালে ২য় বার তাকানোর প্রয়োজন মনে করে না। তার মুখে এমন কথা?
সজীবঃ প্লিজ ব্রো সত্যি করে বলতো মেয়ে টা কে? যাকে প্রথম বার দেখেই প্রেমে পড়ে গেলি?
রাহুলঃ জানিনা। তবে এটা জানি ওই মেয়ে টা কে আমার চাই।
আবিরঃ আহা কোথায় থাকে ওই মেয়ে সেটা তো বলবি?
রাহুলঃ এই কলেজে একটু আগে দেখেছি।(তারপর রাহুল ওদের সব বলে) আর কখনো এই মেয়ে টা এই কলেজে আমি দেখেনি হয়তো আজকেই নতুন। আমার ওই মেয়ে কে খুঁজে বের করতেই হবে চল।
আবির & রিফাত & সজীবঃ হ্যাঁ চল ব্রো। যদি এই কলেজেই আসে তো পেয়ে যাবো।
রাহুলঃ হ্যাঁ।
শান্ত প্রীতির Admission confirm করে। এদিকে রাহুল আর ওর ফ্রেন্ডস রা সবাই এক এক করে সব খানে খুঁজে দেখছে রাহুলের বলা ওই মেয়ে টা কে। রাহুল আর ওর ফ্রেন্ডস রা সাইমার ক্লাস রুমে যায়। ভালো করে খুঁজে দেখছে সেই মেয়ে টা আছে কি না? রাহুল সাইমা কে খেয়াল করে নি নয়তো খুঁজে পাওয়া টা সহজ হয়ে যেতো। কিন্তুু ওর Bad luck....
শান্ত প্রীতি কে নিয়ে কলেজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে। কিছু প্রয়োজনীয় Book লাগবে প্রীতির। শান্ত প্রীতি কে নিয়ে সোজা Book shop এ চলে যায়। প্রীতি তার মন খারাপের সময় বই পড়ে। তাই জন্য সে কিছু গল্পের বই ক্রয় করে আর সাথে প্রয়োজনীয় বই গুলো ও। শান্ত ও নিজের জন্য কিছু important বই নেয়।
শান্তঃ প্রীতি...!
প্রীতিঃ হু।
শান্তঃ একটা জায়গায় যাবে?
প্রীতিঃ আজকে না প্লিজ ভাইয়া আমার না খুব ঘুম পাচ্ছে😴
শান্ত প্রীতির কথা শুনে পিক করে হেসে দেয়। প্রীতি কে দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুব ঘুম আসছে ওর।
শান্তঃ আচ্ছা ঠিক আছে বাসায় চলো।
প্রীতিঃ হু।
রাহুল আর ওর ফ্রেন্ডস রা পুরো কলেজ খুঁজে ও সেই মেয়ে টা কে পেলো না। হতাস হয়ে গেলো রাহুল। মাএ ২/৩ মিনিট এর ব্যবধানে কই চলে গেলো মেয়েটা। রাহুল মন খারাপ করে আছে।
রিফাতঃ কিরে ভাইয়া তুই কি এলিয়েন/ জ্বীন দেখলি না তো সত্যি করে বল?
রাহুলঃ মানে?😠
রিফাতঃ না মানে বলছিলাম যে পুরো কলেজ খুঁজলাম কই চলে গেলো মেয়েটা?
রাহুলঃ😢😢
আবিরঃ আরে রাহুল মন খারাপ করিস না। হয়তো সেই মেয়ে টা আজকে কলেজ থেকে চলে গেছে না হলে তো পেয়েই যেতাম বল।
রাহুলঃ কিন্তুু😥
সজীবঃ আরে আগামীকাল ঠিক পেয়ে যাবি এখন চল ক্লাস করতে হবে।
রাহুলঃ না আমার আর আজকে ক্লাস করা হবে না তোরা করে নে।
আবিরঃ তো কে ছাড়া কখনো আমরা কেউ ক্লাস করেছি?
রাহুলঃ না😞
রিফাতঃ তাহলে ধরে নে আজকে ও করবো না। এখন চলতো কোথাও একটা বসে আড্ডা সেই দেখবি মন ভালো হয়ে যাবে। আর তাছাড়া রাহুল চিন্তা করিস না দেখবি তোর সেই পরী কে আগামীকাল ঠিক পেয়ে যাবি।
রাহুলঃ ঠিক তো?
আবিরঃ হ্যাঁ দেখে নিস। তুই এই কলেজে আসতে দেখেছিস তো অবশ্যই সে এখানে আরো আসবে।
সজীবঃ আর তখনি সব details বের করে নিবো ব্যাচ কাজ শেষ।
রাহুলঃ জানি না মেয়ে টার মধ্যে কি এমন আছে তবে সত্যিই আমি প্রথম দেখতে ওর প্রেমে পড়ে গেছিরে।
রিফাত & সজীব & আবিরঃ 😂😂
পিয়াসের যেনো কোনো কিছু তে মন ই আসছে না। প্রীতির ব্যাপার টা খুব ভাবাচ্ছে তাকে। না চাইতে মন টা যেনো বার বার প্রীতির নাম ই জপ করছে।
এদিকে শান্ত গাড়ি ড্রাইভ করছে আর বার বার আড়চোখে প্রীতি দিকে তাকাচ্ছে। প্রীতি কে শান্তর কেমন যেনো লাগে। এই প্রীতি আর আগের বারের প্রীতি বেশ আলাদা। এতো চঞ্চল মেয়ে হঠাৎ এতো চুপচাপ...! ব্যাপার টা বুঝলি না শান্ত। এই বিষয় টা খুব ভাবাচ্ছে তাকে।
শান্ত এসব ভাবছে আর হঠাৎ ই প্রীতি শান্তর কাঁধে মাথা রাখে। শান্তর হুস ফিরে তাকিয়ে দেখে প্রীতি তার কাঁধে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। শান্তর খুব ইচ্ছে করছিলো প্রীতি কে আরো কিছু টা কাছে নিয়ে এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে। কিন্তুু এই অধিকার নামক শব্দটার জন্য সে পারবে না তার ভালোবাসা কে অপবিএ করতে। শান্তর বেশ ভালোই লাগছে।
প্রীতি ঘুমাচ্ছে আর শান্ত আস্তে আস্তে ড্রাইভ করছে যাতে প্রীতির ঘুম না ভাঙ্গে। ঘুমন্ত অবস্থায় প্রীতি শান্তর কাঁধে রয়েছে। শান্তর এই মুহূর্ত টা সব কিছুর থেকে আলাদা। মুচকি হাসে শান্ত।
একটা সময় প্রীতি কে নিয়ে শান্ত বাসায় চলে আসে। সমস্যা হলো প্রীতি ঘুমাচ্ছে। ঘুম ভেঙ্গে দেওয়া ঠিক হবে না। তাই শান্ত প্রীতি কে কোলে তুলে নেয়। আর এবার প্রীতির দিকে তাকিয়ে হাসে।
যদি জেগে থাকতো হয়তো এতোক্ষনে শান্তর খবর ই ছিলো। ছোট বেলা থেকেই প্রীতির দুষ্টুমি হাসি খুশি এসব দেখতে একটু আলাদা রকমের ভালো লাগা কাজ করতো শান্তর। তবে সেটা ও ভালোবাসা ছিলো কিনা তার জানা নেই।
শান্তর কোলে প্রীতি কে দেখে শান্তর আম্মু বলে।
শান্তর আম্মুঃ কিরে শান্ত আজকে প্রীতি ঘুমিয়ে গেছে বুঝি?
শান্তঃ হু😒
শান্তর আম্মুঃ হয়তো টায়ার্ড ছিলো তাই। রুমে শুইয়ে দে ওও ঘুমোক। রাতে হয়তো ভালো করে ঘুম হয় নি।
শান্তঃ হ্যাঁ।
শান্ত প্রীতিতে ডুবে গেছে পুরো। তাই সে ভুল করে প্রীতি কে তার রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দেয়। বিছানায় শুয়ে আছে একটা অপ্সরী। শান্ত প্লোরে হাটু গেরে বসে প্রীতি কে দেখছে। যতোই দেখছে তবুও যেনো আরো বেশি প্রীতি কে দেখতে চাইছে তার মন।
কখন প্রীতি কে নিজের করে পাবে সেটা শান্তর জানা নেই। তবে এটা সে জানে প্রীতি কে ছাড়া তার জীবন অসম্পূর্ণ।
শান্তঃ প্রীতি #তোমাকে_প্রয়োজন। এই শান্তর জীবনে তোমাকে খুব প্রয়োজন। তোমাকে না পেলে তোমার কি হবে জানিনা তবে আমি ভালো থাকতে পারবো না। কক্ষনো না। প্রীতি I Love You....I Love You So Much....😢
শান্তর চোখে পানি। এটা নতুন নয়। প্রীতি কে হারানোর কথা ভাবলেই তার নিজের অজান্তেই কান্না চলে আসে। নিজের থেকে ও কেনো যেনো প্রীতি কে সে বেশি ভালোবেসে ফেলেছে। তাই হারানোর ভয় টা তাকে খুব কাঁদায়। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে শান্ত।
হঠাৎ ই মনে পড়ে সে প্রীতি কে তার রুমে নিয়ে এসেছে। তাড়াতাড়ি করে শান্ত কে প্রীতি কে সাইমার রুমে শুইয়ে দিয়ে আসে।
প্রীতির কোনো রেসপন্স ই নেই। সে তো গভীর ঘুমে মগ্ন। প্রীতি একদম ঘুম পাগলি। এই ঘুমের ঘোরে কেউ যদি ওকে চুরি ও করে নেয় তাও তার কোনো খেয়াল থাকবে না।
রুহী আর রিদিতা বাসায় গিয়ে প্রীতির সাথে Contact করার চেষ্টা করছে। কিন্তুু প্রীতি ফোন ই তুলছে না। তুলবেই বা কিভাবে সে তো ঘুমাচ্ছে।
পিয়াস সব ক্লাস শেষ করে মানহাদের বাসায় উদ্দেশ্যে চলে যায়। কিন্তুু ভাবনার তো শেষ ই নেই। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়। পিয়াস বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। এমন সময় মানহা রুমে আসে।
মানহাঃ ভাইয়া কোথায় তুমি?
পিয়াসঃ এইতো।
মানহাঃ চলো ভাইয়া আম্মু তোমাকে খেতে ডাকছে।
পিয়াসঃ আচ্ছা চলো।
সাইমা ও ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে আসে। আর প্রীতি কে খুঁজলে শান্ত সাইমা কে প্রীতির ঘুমানোর কথা বলে।
লাঞ্চ টাইম হয়ে এসেছে বাট প্রীতি এখনো ঘুমাচ্ছে। এতো বেশি শুয়ে থাকলে শরীর খারাপ করবে। তাই সাইমা গিয়ে প্রীতি কে ডেকে দেয়। আর তাকে ফ্রেশ হতে বলে নিজে ও অন্য রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
লাঞ্চ শেষ। প্রীতি আর সাইমা ছাঁদে বসে আছে। প্রীতি দোলনায় বসে দোল খাচ্ছে। পিয়াসের ব্যাপার টার জন্য তার খুব বেশি ই মন খারাপ।
সাইমাঃ আপু কি হয়েছে তোমার বলবে তো না কি ধুর আমার ও তোমার মন খারাপ যে ভালো লাগছে না।😥
প্রীতিঃ না মানে আচ্ছা সরি। আর মন খারাপ করবো না।
সাইমাঃ সত্যি তো?
প্রীতিঃ একদম।
প্রীতির মন খারাপের জন্য সাইমা কষ্ট পাচ্ছে। এটা দেখে নিজের ই খারাপ লাগছে। পিয়াস তো তাকে ভালোই বাসে না অযথা পিয়াসের জন্য মন খারাপ করে কি লাভ। তাই প্রীতি ও এখন থেকে আর মন খারাপ করবে না।
শান্তঃ সত্যিই আর মন খারাপ করবে না তো?(শান্ত ও ছাঁদে এসে)
প্রীতি আর সাইমা শান্ত দিকে তাকিয়ে আছে। শান্ত মুচকি হাসে।☺
শান্তঃ কি হলো বলো না?
প্রীতিঃ হ্যাঁ আর মন খারাপ করবো না।😊
এতো দিন পর শান্তর মনে হলো সেই আগের প্রীতি কে দেখছে। প্রীতির সেই প্রানবন্ত হাসি টা তাকে খুব মানায়।
শান্তঃ আচ্ছা চলো...!
প্রীতি & সাইমাঃ কোথায়?
শান্তঃ গেলেই দেখতে পাবা। চলো তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও।
প্রীতিঃ কিন্তুু?
সাইমাঃ এই আপু কোনো কিন্তুু নয় চলো।
প্রীতির আর কি করার ইচ্ছে না থাকলে ও বেরোতেই হবে।
শান্তঃ আম্মু আমাদের ফিরতে দেরি হয়ে পারে।
শান্তর আম্মুঃ আচ্ছা ঠিক আছে সাবধানে থাকবি।
শান্তঃ ওকে।
শান্ত প্রীতি আর সাইমা বেরিয়ে পড়ে। শান্ত ছাড়া কেউ ই জানে না তারা কোথায় যাচ্ছে। প্রীতির ও এখন কেন যেনো ভালো লাগছে।
#To_be_continue