#তোমাকে__প্রয়োজন💔
#Written__by__Hiya_Chowdhury❣
#Part__02
রুহী আর রিদিতা প্রীতি কে শান্তনা দিয়ে নিজেদের বাসায় চলে যায়। প্রীতি যেন নিজের কোনো ক্ষতি না করে এ জন্য তারা প্রীতি কে অনেক কিছু বুঝায়। কিন্তুু আদৌ কি প্রীতি ওদের কথা গুলোই মানতে রাজি। তবে হ্যাঁ নিজের কোনো ক্ষতি করবে না এটা সে জানে। কেন না সে নিজের ক্ষতি করলে আর কেউ না হোক ওর বাবা-মা কষ্ট পাবে। নিজের কষ্টের চেয়ে বাবা-মায়ের কষ্ট টাই বেশি হবে। তাই নিজের ক্ষতি করার প্রশ্নই আসে না।
(#তোমাকে_প্রয়োজন গল্পের হিরো পিয়াস আর হিরোয়িন প্রীতি😍)
প্রীতি ডিসিশন নিয়ে নিয়েছে সে এখন কি করবে। নিজেকে বেশ স্বাভাবিক করে বাসায় ঢুকে প্রীতি। প্রীতির আম্মু প্রীতি কে বাসায় আসতে দেখে উনি প্রীতির কাছে যান। প্রতিদিন কলেজ থেকে আসলে পুরো বাসা মাথায় তুলতো প্রীতি। যেটা কিনা প্রীতির বাবা-মায়ের অভ্যাস হয়ে গিয়েছিলো। প্রীতি কে উনারা নিজের থেকে ও বেশি ভালোবাসে। একমাএ মেয়ে বলে কথা। কিন্তুু হঠাৎ করে কি হলো প্রীতির?
প্রীতির আম্মুঃ প্রীতি,,,,
প্রীতিঃ জ্বী আম্মু কিছু বলবে?
প্রীতির আম্মুঃ কিরে আজকে এতো চুপচাপ কোনো প্রবলেম হয়েছে তোর?
প্রীতিঃ না আম্মু এসব কিছু না।
প্রীতির আম্মুঃ তাহলে কি কেউ আমার মেয়েটাকে কিছু বলেছে?
প্রীতি জানতো ওর আম্মু ঠিক ধরে ফেলবে কিন্তুু উনাকে সব টা বলা ঠিক হবে না।
প্রীতিঃ না আম্মু একদম না। আজকে এমনি ই মন খারাপ। আচ্ছা আম্মু শোনো না আমি ফ্রেশ হয়ে আসি কেমন?
প্রীতির আম্মুঃ আচ্ছা ঠিক আছে যা।
প্রীতি ওয়াশ রুমে গিয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দিয়ে ঝর্ণার নিচে বসে পড়ে। চোখ গুলোর ও আজব নিয়ম। একাকিত্ব দেখলেই জেনো মানতেই চায় না।প্রীতির চোখের পানি আর ঝর্ণার পানি এক হয়ে মিশে যাচ্ছে। বেশ কিছুক্ষন পর ওয়াশরুম থেকে বের হয় প্রীতি। আয়নায় নিজেকে দেখছে প্রীতি।
সেই মায়াময় চেহারা আর নেই। কেমন যেনো মলিন হয়ে গেছে। চোখ গুলোর ও ফুলে আছে। এই চোখ ওর আব্বু আম্মু দেখলে উনারা ধরে ফেলবেন ও যে কেঁদেছে।
লম্বা ঘন কালো চুল গুলো বালিশের উপর বিছিয়ে দিয়ে নিজের শরীর টাকে বিছানায় এলিয়ে দেয় প্রীতি। বড্ড ক্লান্ত লাগছে নিজেকে। পিয়াস কে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতে হাপিয়ে উঠেছে প্রীতি। চোখ বেয়ে আরো কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে।
পিয়াস বেশ ভালোভাবেই ক্লাস করা শেষ করে।বেশ হাসি খুশি ই আছে। কোনো অনুতপ্ত বোধ করছে না তার। নাহ আজকে আর ভালো লাগছে না বাসায় চলে আসে পিয়াস।
প্রীতির আম্মু প্রীতির রুমে গিয়ে দেখে ওও ঘুমিয়ে আছে। উনি প্রীতির পাশে বসে মাথায় হায় বুলিয়ে দিতেই প্রীতি চোখ খুলে। কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলো মনেই নেই।
প্রীতির আম্মুঃ কিরে প্রীতি তোর কি শরীর খারাপ।?
প্রীতিঃ না আম্মু।
প্রীতির আম্মুঃ তাহলে এখন ঘুমাচ্ছিস যে?
প্রীতিঃ রাতে ঘুম হয় নি কেনো জানি তাই।😢(মিথ্যে বলে)
প্রীতির আম্মুঃ ঠিক তো?
প্রীতিঃ একদম।
প্রীতির আম্মুঃ আচ্ছা ঠিক আছে এখন চল লাঞ্চ করতে হবে তো নাকি? তোর বাবা তোর জন্য না খেয়ে বসে আছে চল তাড়াতাড়ি।
প্রীতিঃ আচ্ছা চলো।
প্রীতির তার বাবা-মায়ের সাথে লাঞ্চ করে নেয়। তারপর সুযোগ খুঁজে কখন সে কথা টা তার বাবা-মায়ের কাছে বলতে পারবে। এবং তারা প্রীতির কথায় রাজি হবেন কিনা। ভাবতে ভাবতে প্রীতি ওর আব্বু আম্মুর রুমের সামনে যায়।
প্রীতিঃ আব্বু আসবো?
প্রীতির আব্বুঃ হুম মামনি আসো। কিছু বলবে?
প্রীতিঃ আসলে?😥
প্রীতির আম্মুঃ আসলে কি?
প্রীতির আব্বুঃ শোনো মামনি যা বলার নির্দ্ধীধায় বলো।
প্রীতিঃ ____________________________!!
প্রীতির আব্বু & আম্মুঃ😓
লাঞ্চ করে পিয়াস তার রুমে শুয়ে শুয়ে ফোনে গেম খেলছে।
পিয়াসের আম্মুঃ পিয়াস আসবো?
পিয়াসঃ হ্যাঁ আম্মু আসো।
পিয়াসের আম্মুঃ বলছিলাম যে তুই কি ফ্রি আছিস?
পিয়াসঃ হুম। কেনো আম্মু?
পিয়াসের আম্মুঃ তোর বড় ফুফি বললো তোকে ওনাদের বাসায় যেতে।
পিয়াসঃ হঠাৎ বড় ফুফির বাসায় কেনো?
পিয়াসের আম্মুঃ আরে তুই তো জানিস মানহার (পিয়াসের ফুফাতো বোন) সামনে কয়দিন বাদেই S.S.C এক্সাম শুরু হবে। তাই তোর বড় ফুফি বললো ওকে একটু দেখতে পড়া সব কমপ্লিড কিনা.! এখন তুই বল যাবি কিনা?
পিয়াসঃ আচ্ছা ঠিক আছে যাবো।
পিয়াসের আম্মুঃ তাহলে শোন বিকেলেই চলে যা।
পিয়াসঃ ওকে।
অন্যদিকে___________________
ম্যানাজারঃ হ্যালো স্যার.!
প্রীতির আব্বুঃ হ্যাঁ ম্যানাজার বলো কি কিছু করতে পারলে?
ম্যানাজারঃ জ্বী স্যার ফ্লাইট এখনো ক্যানসেল হয় নি আরো ২ দিন সময় আছে। আপনি যখন যাচ্ছেন না তাহলে আপনার আর ম্যাম এর ফ্লাইট ক্যানসেল। আর প্রীতি মামনির টা সব ওকে।
প্রীতির আব্বুঃ কখন ফ্লাইট?
ম্যানাজারঃ স্যার আগামীকাল সকাল ১১:৩০ মিনিটে।
প্রীতির আব্বুঃ থ্যাংক ইউ সো মাচ্।
ম্যানাজারঃ ওয়েলকাম স্যার।😊
প্রীতির রুমে_________________
প্রীতির আম্মুঃ প্রীতি এভাবে হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলি।😥 কি হয়েছে তোর বল প্রীতি😓
প্রীতিঃ আম্মু ধুর তোমার এমন করলে আমি ও কিন্তুু কান্না করবো বলে দিলাম। তোমার ই তো চেয়েছিলে না আমি দেশের বাইরে থেকে পড়াশোনা করি। তাহলে এখন কেন এমন করছো বলো? আম্মু মাএ তো ২ টা বছর। এর পর তো আমি আবার এখানেই ফিরে আসবো তাই না? আর তাছাড়া তোমাদের সাথে তো প্রতিদিন কথা হবেই..!
প্রীতির আম্মুঃ তবুও😭
প্রীতিঃ প্লিজ আম্মু শান্ত হও😑
প্রীতির আব্বু আর প্রীতি তার আম্মু কে শান্তনা দেয়। কষ্ট হচ্ছে ২ জনের ই। কিন্তুু ওনাদের ই দোষ উনারা ই চেয়েছিলো প্রীতি দেশের বাইরে থেকে পড়াশোনা করুক। তাই না ও বলতে পারছেন না। আর মাএ ২ বছর লাগে প্রীতির অনার্স কমপ্লিড হতে। So প্রীতি দেশের বাইরে থেকে অনার্স কমপ্লিড করবে।
পিয়াস বিকেলে রেডি হয়ে রওনা দেয় বড় ফুফির বাসায় উদ্দেশ্যে। বড় ফুফির বাসা থেকে অবশ্য কলেজে আসা যায় তবুও হ্যাড স্যার থেকে ৩/৪ দিনের ছুটি নিয়ে নেয় পিয়াস। কয়েকদিন মানহা কে পড়ানোর পাশাপাশি ঘুরে আসলে মন্দ হয় না। এমনি তে সকালের ব্যাপার টার জন্য রাগ লাগছে। কলেজের Student হয়ে কিনা কলেজের স্যার কে প্রপোজ ছিঃ। ভাবতে মুড খারাপ হয়ে যায়।
প্রীতির ফুল খুব পছন্দ। তাই ওর আব্বু প্রতি সপ্তাহে এত্তো গুলো ফুলের গাছ নিয়ে এসে প্রীতি কে সারপ্রাইজ দেয়। ছাঁদের দোলনায় বসে ফুলের টব গুলোর গাছে ফুটন্ত ফুল গুলোতে হাত বুলিয়ে দেয়। বেশ চমৎকার লাগছে ফুল গুলো। মুখের কোনে এক চিলতি হাসি প্রীতির। এসব কিছু ছেড়ে চলে যাবে ভাবতেই মন টা ভেঙ্গে গেছে। কিভাবে এসব কিছুর মসয়া ত্যাগ করবে..? এটা ভাবছে প্রীতি।
হঠাৎ ফোন টা বেজে ওঠে।প্রীতি দেখে রুহী ফোন দিয়েছে। প্রথমে রুহী তারপর রিদিতার ২ জনের সাথেই কথা বলে নেয় প্রীতি। ভাগ্য করে এমন ২ টা কলিজা পেয়েছে প্রীতি। ওরা সত্যিই প্রীতিকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তুু প্রীতি যে চলে যাচ্ছে এটা কিছুতেই ওদের জানানো যাবে না। কারণ ওরা জানতে পারলে কিছুতেই প্রীতি কে যেতে দেবে না।
প্রীতি ওদের বুঝিয়ে বলে যে ওও আগামীকাল কলেজে যাবে না। তাই ওদের অনেক কষ্ট করে ম্যানেজ করে ওদের কে কলেজে যেতে রাজি করে।
সন্ধ্যা হয়ে আসছে তাই প্রীতি গাছ গুলোতে আবার হাত বুলিয়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।
পিয়াস ওর বড় ফুফির বাসায় পৌঁছে। নাস্তা করে নেয় পিয়াস। তারপর পিয়াস কে ওর রুম দেখিয়ে দেয় মানহা। মানহা বেশ খুশি পিয়াস আসায়।
সব কিছু গুছিয়ে নেয় প্রীতি। কারণ ওর ফ্লাইট আগামীকাল সকাল ১১:৩০ এ। আব্বু আম্মু ২ জনের মন খারাপ প্রীতি শান্তনা দেয় ২ জন কেই।
প্রীতি ডিনার শেষ করে শুয়ে পড়ে। কিন্তুু চোখে ঘুম নেই। কিছুতেই ঘুম আসছে না তার। পিয়াসের সাথে এতো দিনের সব কিছু ভাবছে প্রীতি। ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হয় না তবু ও যে ছেড়ে যেতে হবে প্রীতি কে। পিয়াসের কাছে যে প্রীতি এখন খারাপ মেয়ে। পিয়াস তো প্রীতি কে আর কখনো দেখতে চায় না তাই প্রীতি ও পিয়াসের কথা টাই সত্যি করছে।
পিয়াস ডিনার শেষে শুয়ে আছে আর ভাবছে আজকে সেই অচেনা নাম্বার থেকে কোনো কল বা এসএমএস আসছে না কেনো? প্রতিদিন তো একটা হলেও এসএমএস আসতো কিন্তুু আজকে...? এসএমএস আর কল আসাটা যেনো পিয়াসের অভ্যাস হয়ে গিয়েছিলো। কেনো যেনো ভালোলাগা কাজ করতে থাকে এটা তে।
বুঝতেই পারছেন কে পিয়াস কে কল বা এসএমএস দিতো? সে মানুষ টি হলো প্রীতি। প্রীতির অভ্যাস ছিলো পিয়াস কে কল দিয়ে পিয়াসের কন্ঠস্বর শোনা।
Whatever এক টা সময় পিয়াস ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তুু প্রীতির চোখে ঘুম নেই। শেষ রাতের দিকে একটু চোখ লেগে এলেও আবার ঘুম ভেঙ্গে যায়। তাই প্রীতি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের তারা গুলোর দিকে এক দৃষ্টি তে চেয়ে থাকে।
Next Day________________
In the morning.........
প্রীতি ওর আব্বু আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে বিমানে উঠে পড়ে। অনেক্ষন কান্না করেছিলো প্রীতি ওর আব্বু আম্মু কে জড়িয়ে ধরে। নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয় পরক্ষনেই। এর আগে বেশ কয়েকবার প্রীতি ওর আব্বু আম্মুর সাথে দেশের বাইরে অর্থাৎ প্রীতির ফুফুনিদের বাসায় গিয়েছিলো প্রীতি। তাই এবার সে নিজে একাই যেতে পারবে ঠিক করেছে। বিমান ছেড়ে দেয় তার আপন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
পিয়াস সকালের নাস্তা করে ঘুরতে বেরোতেই যাচ্ছিলো মানহা বায়না ধরে ওও নাকি পিয়াসের সাথে যাবে। কি আর করা। মানহা কে সাথে নিয়েই বের হতে হলো পিয়াস কে।
বিমানটি তার গন্তব্যে পৌঁছে যায়। প্রীতি বিমান থেকে নেমে বাইরে আসে এমন সময়।
😍❤Welcome back to Canada❤😍
প্রীতির সামনে একটা ফুলের তোড়া ধরে কেউ এই কথাটি বলে উঠে। ফুলের তোড়া টার জন্য ওই ব্যক্তির মুখ টা দেখা যাচ্ছে না। ফুলের তোড়া টা প্রীতি হাতে নিতেই প্রীতি সামনে তাকিয়ে দেখে______________😱😱
#To_be_continue
((কেউ কি বলতে পারবেন প্রীতি তার সামনে কাকে দেখে অবাক😱😱?))