প্রিয় প্রাণ
সাইয়্যারা খান
পর্বঃ৫
তোঁষা পুরো বাড়ীটা ঘুরে ঘুরে দেখছে। আরহাম কিচেন থেকেই একবার গলা উঁচিয়ে বললো এদিক ওদিক না ছুটতে। তোঁষা বুঝি শুনে? নিজের মতো এদিক ওদিক দেখছে ও। বড় একটা ড্রয়িং রুম পুরোটা গোছালো। গতকাল আরহাম ওকে এখানে এনে বেডরুমে আটকে রেখেই কোথায় যেন চলে গিয়েছিলো। তোঁষা'র দেখা হয় নি কিছুই। ওদের বেড রুম ছাড়াও আরো রুম আছে। হঠাৎ তোঁষা চিৎকার করতেই হাতের কাজ ফেলে দৌড়ে বের হয় আরহাম। মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তোঁষা ব্যালকনিতে। আরহাম অস্থির হয়ে ওর হাত টেনে নিজের কাছে এনে প্রশ্ন করে,
-- কি হয়েছে তুঁষ? চিৎকার করলি কেন?
তোঁষা'র বিষ্ময় যেন কাটছেই না। আরহাম ওর বাহু ঝাঁকাতেই তোঁষা মুখ ফুটে জিজ্ঞেস করলো,
-- আমরা কোথায়?
ঢোক গিললো আরহাম। কিছুতেই তোঁষা'কে বলা যাবে না ওরা কোথায় আছে এখন। তোঁষা পুণরায় জিজ্ঞেস করতেই আরহাম পাল্টা প্রশ্ন করে,
-- কি হয়েছে? বল আমাকে।
-- আমরা কত তলায় আছি?
-- বাইশ।
তোঁষা যেন ধাক্কা খেলো একটা। বাইশ তলার উপরে কি না ওরা? বিস্ফোরিত চোখে আরহামের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-- কার বাসা এটা?
-- তোর।
-- মানে?
-- মানে আমার বউয়ের বাসা এটা।
তোঁষা চমকে তাকাতেই আরহাম ওর বোঁচা নাকটা টেনে বললো,
-- আমার বুঁচি'র জন্য এটা। অনেক আগের কেনা।
-- আমার তো হাইটে ফোবিয়া তাহলে এত উপরে কেন?
আরহাম একটু চুপ থেকে তোঁষা'র মুখটা দেখে নিলো যা বার্তমানে কৌতুহলে ভরপুর। কিঞ্চিৎ হেসে জানালো,
-- তোকে আমার থেকে দূর করতে পুরো শেখ পরিবার লেগেছে প্রাণ। তাদের থেকে তোকে লুকাতেই এতকিছু।
তোঁষা'র প্রাণে জোয়ার বয়ে গেলো নিমিষেই। সেই জোয়ারের পানি মেটালো তার সকল জাগ্রত প্রশ্ন। আরহামের পানে তাকিয়ে চেষ্টা করলো নিজের চক্ষু তৃষ্ণা মেটানোর। এই সুন্দর আরহাম ভাইটা ওর অনেক প্রিয়।
পুড়ে যাওয়ার গন্ধ নাকে ঠেকতেই নিজের বোঁচা নাকটা কুঁচকে ফেলে তোঁষা। আরহাম তখন তাকিয়ে তোঁষা'র দিকে। গভীর দৃষ্টি ফেলে ভেবে যাচ্ছে অনেক কিছু।
তোঁষা নাক কুঁচকে আরহামের বাহুতে ধাক্কা দিয়ে বললো,
-- পুড়ে যাচ্ছে তো আপনার ফিশ!
আরহামের টনক নড়ে কিছুটা। ও ইটালিয়ান ফিশ ট্রাই করছিলো। এক হাতে এখনও স্পাচুলা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পরণে একটা চেইক ছাপার কিচেন এপ্রোণ। আরহাম ছুঁটে যেতে নিলেই তোঁষা ও পিছু নিলো তার। এতক্ষণ আরহাম তাকে যেতে দেয় নি। গ্যাস অফ করে আরহাম ফ্রাই প্যানটা নামিয়ে পাশে রাখতে রাখতে বললো,
-- একটুর জন্য বেঁচে গেলো আমার ফিশ। বুঁচি'র বোঁচা নাক কাজে এসেছে।
কথাটা বলতে বলতে ওভেন থেকে ফ্রাইড রাইস বের করে আরহাম। সে খেয়াল করে নি তোঁষা'র মুখ ফুলানো। আরহাম প্লেট হাতে ঘুরতেই দেখা মিললো তার তুঁষে'র। মাথা নিচু করে কোণ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। আরহাম হরবরালো৷ হকচকালো। প্লেট সাইডে রেখে তোঁষা'র হাত টেনে ধরে বলে উঠলো,
-- কি হয়েছে? তুঁষ?
তোঁষা রা করে না। ছোট থেকেই ওর নাকটা নিয়ে সবাই রাগাতো ওকে। শেখ বাড়ীর একমাত্র তোঁষা'র নাকটাই বোঁচা বাকিদের কি সুন্দর খাঁড়া খাঁড়া নাক। সবচেয়ে সুন্দর নাক ওর আরহাম ভাই এর। আরহাম ভ্রু কুচকে কিছুসময় অবলোকন কর। ঠোঁটে ওর চাপা হাসি। ঠোঁট দিয়ে ঠোঁট চেপে আটকে রেখেছে সে। তোঁষা'র মুখটা হাত দিয়ে তুলে বললো,
-- অন্য কেউ বললে তার নাক ফাটিয়ে দিব কিন্তু আমি বলবই। আমার বুঁচি তুই। আমরণ থাকবি।
তোঁষা'র চোখের সামনে ভেসে উঠে বছর কয়েক আগের ঘটনা।
~এই তো ক্লাস সিক্সে পড়ে তখন তোঁষা। সারাদিন ছুটাছুটি ওর র*ক্তে মেশানো যেন। স্কুল থেকে বান্ধবী'র হাত ধরে গেট পর্যন্ত আসতেই দেখা মিলে তুহিনে'র। অন্যদের বাবা থেকে কিছুটা বয়স্ক তুহিন। হওয়াটাই স্বাভাবিক। মধ্যবয়সে দ্বিতীয় বার বাবা হয়েছে বলে কথা। তবে বুঝার কায়দা করা যায় না। বলা হয় "পুরুষ নব্বই তে ও জোয়ান কিন্তু নারী;সে কুড়িতেই বুড়ি"। বাবা'কে দেখেই তোঁষা ফড়িং এর উড়ে চলে আসে। মেয়ে'র কপালের ঘামে লেপ্টে থাকা চুলগুলো কানে গুজে ব্যাগটা নিজের কাঁধে তুলে এক হাতের মুঠোয় পুরে নেয় তোঁষা'র হাত। তোঁষা বুঝি থেমে থাকার মেয়ে? আদরের আহ্লাদী মেয়ে ফুডুং ফুডুং করে এটা ওটা বলেই যাচ্ছে। তুহিন কখনো বিরক্ত হন না বরং ভালো লাগে তার মেয়ের চঞ্চলতা। ঠিক যেন তার কিশোরী সেই স্ত্রী'র কার্বন কপি তোঁষা। বাবা'র হাত টেনে ধরে বায়না ধরে তোঁষা,
-- আব্বু আব্বু আইসক্রিম খাব একটা।
তুহিন আবার মেয়ে পাগল বাপ। মেয়ে চাইবে সেটা না দিয়ে সে থাকবে তা কখনো হয়েছে? না কখনোই না। তবুও মুখটা অসহায় করে জানায়,
-- পুতুল মা বকবে না বলো? গত সপ্তাহে ঠান্ডা ভালো হলো।
-- তুহিন শেখে'র বউ'কে কে জানাবে আব্বু? আমার আব্বু তো জানাবে না এটা শিওর এর মানে কি তুমি জানাবে?
মেয়ে'র গোলগাল ছোট্ট মুখটার পানে তাকিয়ে আর কিছু বলতে পারে না তুহিন। এগিয়ে যায় আইসক্রিম ওয়ালার ভ্যানের দিকে। তোঁষা কোন ফ্লেভার খাবে জিজ্ঞেস করতেই ওর মুখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। একে একে বলতে থাকলো,
-- চকলেট, ম্যাংগো, ভ্যানিলা আর স্ট্রবেরি মিক্স করে কর্নেটো তে ভরে দিন। উপর দিয়ে চকলেট সিরাম দিবেন মামা। আর হু হু উমম, কয়েকটা চকো চিপ্স ছিটিয়ে দিয়েন।
বলেই দাঁত কেলিয়ে হাসলো। তুহিন দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। এই মেয়ে সুযোগ পেলেই তার অসৎ ব্যবহার করবে। এই যে এখন আইসক্রিম খাবে তাতে তিন জনের টা একাই খেয়ে নিবে সে। বাহানার শেষ নেই। একস্ট্রা টাকা ছাড়া এভাবে কর্ণেটো ফিল ও করা হয় না। তোঁষা'র হাতে আইসক্রিম আসতেই ও খুঁটে খুঁটে আগে চকলেট খাওয়া শুরু করলো। বাবার মুখে দিতেও ভুলে নি।
তুহিনের কাঁধে তখনও তোঁষা'র ব্যাগ। পরিচিত একজনের সাথে দেখা হতেই তোঁষা'কে দাঁড় করিয়ে তিনি একটু সাইডে যান কথা বলতে।
কয় মিনিট হলো? এই তো দশ থেকে পনেরো মিনিট। এর বেশি তো না। তবে তুহিন ফিরতেই তার মনে হলো এখানে কয়েক ঘন্টা পর ফিরেছে সে। তার পুতুলের হাতের আধ খাওয়া আইসক্রিমটা রাস্তায় পড়ে গলে গিয়েছে কিছুটা। গাড়ির সাথে লেগে ফুঁপিয়ে কাঁদছে তোঁষা। না ভুল। তোঁষা মোটেও কাঁদছে না। সে রাগে ফুঁপাচ্ছে। রাগের চোটে তার ডাগর ডাগর আঁখিতে পানি জমেছে। কিন্তু তুহিনের এই ধারণা ও ভুল। তার মেয়ে কাঁদছে নিজের আইসক্রিমের জন্য আর রেগে আছে একটা ছেলের উপর। ছেলেটাকে চেনে তুহিন। তোঁষা থেকে দুই ক্লাস উপরে সে। বর্তামানে ছেলেটার অবস্থান আরহামের নিচে। তার কলার আরহামের হাতের মুঠোয়। তুহিন ছাড়াতে আসতে আসতে শক্ত করে দুটো চড় আরহাম ছেলেটার গালে দিয়ে দিলো। তুহিন দাঁড়িয়ে গেলেন। কি হবে এখন যেয়ে? তবুও পা ঠেলে গিয়ে আরহাম'কে ধমকে উঠে,
-- আরহাম! আব্বু ছাড়ো ওকে। কি করছো? কত ছোট তোমার, ওর গায়ে হাত কেন তুলেছো?
-- একদম ঠিক হয়েছে। বল এখন বল। এখন বলিস না ক্যান হ্যাঁ?
তুহিন তাকালো মেয়ের দিকে। ভীতুর ডিম তার মেয়ে আরহামের হয়ে কথা বলছে। সাহস অবশ্য সে আরহাম'কে দেখেই পায়। ছেলেটাকে তুলে তুহিন বুঝ দিতে দিতে আরহাম তোঁষা'র জন্য আরেকটা আইসক্রিম নিয়ে নেয়। মাথায় হাত রেখে শুধু বলে,
-- আমার বুঁচি'কে একমাত্র আমিই বুঁচি ডাকব।
পরেই আবার বলে,
-- এই সপ্তাহে আর মিষ্টি কিছু খাবি না। ডায়াবেটিসের পয়েন্ট বেড়ে যাবে।
তোঁষা জিহ্বা দিয়ে আগে আইসক্রিমটা চেটে নেয়। বলা যায় না এটাও যদি পড়ে যায়?
তুহিন পরে ঘটনা শুনে বাকরুদ্ধ। তোঁষা'কে ঐ ছেলে শুধু বলেছিলো, " কি বুঁচি আইসক্রিম খাচ্ছো?"
ব্যাস তোঁষা রেগে আইসক্রিম ছুঁড়ে মা'রে ছেলেটার গায়ে। এত রাগ এই মেয়ের! তুহিন মাঝে মধ্যে ভয় পায়। কে সামাল দিবে এই রাগী পুতুল'কে। ঐ রাস্তা দিয়েই আরহাম ভার্সিটি যাচ্ছিলো। রাস্তায় এই ঘটনা দেখেই পরবর্তী ঘটনার সূচনা ঘটায় সে।
.
তোঁষা'র ভাবনায় ছেঁদ পড়ে আরহামের কথায়,
-- খায়িয়ে দিব?
তোঁষা মাথা নাড়ায়। আরহাম রাইস সহ ভেজিটেবল নিলেই তোঁষা মুখ কুঁচকে বললো,
-- সবজি ভালো লাগে না আরহাম ভাই। ফিশ দিন।
-- চুপচাপ হা কর তুঁষ। শরীরের কি হাল তোর? শেখ বাড়ীর লোক কি ফকির হয়ে ছিলো যে সবজি কিনতে পারে নি?
তোঁষা বেজার মুখ করে লোকমাটা মুখে তুললো। আরহাম নিজেও খাচ্ছে। তোঁষা খেতে খেতে বললো,
-- আপনি দেশে কবে ফিরেছেন?
আরহাম এক লোকমা ওর মুখে দিয়ে উত্তর করলো,
-- একমাস।
তোঁষা চমকে তাকালো। অসহায় কন্ঠে শুধালো,
-- আমাকে আগে কেন আপনার কাছে আনলেন না আরহাম ভাই? আপনি কি জানতেন না আপনার তুঁষে'র কষ্ট হচ্ছিলো।
আরহামের হাত থেমে গেল। সে জানতো কিন্তু করার কি ই বা ছিলো। তোঁষা'র মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
-- তোকে তো বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছিলো না প্রাণ। কিভাবে কি করতাম। গতকাল তুই পার্লারে যেতে বের হলি। সুযোগ পেলাম। তুলে নিয়ে আসলাম।
-- আপনি জানতেন আমার বিয়ে....
-- হু।
-- কার সাথে..
-- চুপ।
-- জানেন?
-- হু।
তোঁষা চুপ রইলো। আরহাম হাত ধুঁয়ে একটা মলম এনে তোঁষা'র ঘাড়ে লাগিয়ে, হাতের কনুইতেও লাগালো। তোঁষা'র দিকে তাকিয়ে বললো,
-- পেটে লাগাতে পারবি?
সময় ব্যায় করে না তোঁষা। পরণের কুর্তি অল্প তুলে দেয়। আরহাম নিঃশব্দে আঁচড় আর কাটা জায়গাগুলোতে মলম লাগায়। দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসে ভেতর থেকে। তোঁষা আরহামের হাতটা ধরে নিজের দুই হাত দিয়ে। নিজের গালে লাগিয়ে বলে,
-- আমার সব ছেড়ে আপনার কাছে এসেছি। এই তুঁষ'টা ই আপনার। সংকোচ কোথা থেকে আসে হু?
#চলবে.....
[গল্প কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে মেশাবেন না তাহলে হতাশ হবেন।]
("শান্তি সমাবেশ" আপাতত প্রি অর্ডার হচ্ছে না। মেলায় আসবে একেবারে। অনলাইনে ও অর্ডার করা যাবে। জানানো হবে সেটা। কে কে বইটি নিতে আগ্রহী। দেখতে চাই।🧐)
গরম চায়ের কপটা হাতে নিয়ে ছুটছে তাঁরা। চাঁদের নিশ্চিত ঘুম ছুটছে। উঠে তাঁরাকে সামনে না পেলে তুলকালাম বাঁধবে জনাব। তারাতাড়ি ছুটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পরতে নিলেই আগলে নিলো চাঁদনী বেগম। তাঁরা ঢোক গিললো। সারাক্ষণই ভয়ে ভয়ে থাকে এই মেয়ে। কারণ যে বুঝে না যে চাঁদনী বেগম তা নয়। যত আতঙ্ক তাঁরার চাঁদকে ঘিরে। চাঁদনী বেগম দীর্ঘ শ্বাস টেনে নিলেন।
-"এত কিসের ভয় তোর? চাঁদ কিছু বললে আমাকে বলবি?"
তাঁরা মলিন হাসলো। এমন শাশুড়ী আজকাল কে ই বা পায়? শশুর বাড়ী একপ্রকার বিলাসিতা করে চলে তাঁরা। শুধু চাঁদ নামক স্বামী'টা জ্বালিয়ে মারছে ওকে। সারাদিন ভয়ে টটস্থ থাকে তাঁরা। যদিও চাঁদ সহজে রাগে না বিয়ের পর তবুও এতবছরের ভয়তো আর একমাসে কমবে না। কাঁপটা হাতে নিয়ে রুমের সামনে যেতেই থামলো তাঁরা। ভেরানো দরজা'টাতে চোরের মতো মাথা ডুকিয়ে তড়িঘড়ি করে আবার তা সরিয়ে নিলো। চাঁদ রুমের কোথাও নেই মানে এখনও গোসল করছে সে। ঝটপট ভেবে নিলো তাঁরা, রুমে ডুকেই চায়ের কাপটা রেখে কেটে পরবে। যেই ভাবা ঐ কাজ। কিন্তু কপাল কি তাঁরা'র এত ভালো? যেই না কাঁপটা রেখে বের হবে ওমনি ঠান্ডা চওড়া একটা পুরুষ দেহ ওকে আগলে নিলো। ছোট্ট তাঁরা'র স্থান হলো সেই বুকে। একদম লেগে গেল। হীম হলো তার দেহ পিঞ্জর। একদম চুপ করে চোখ খিঁচে বন্ধ করে নিলো। তখনই কানের পেছনে পেলো ভেঁজা ঠোঁটের স্পর্শ। মোচরে সরে যেতে চেয়েও পারলো না। এত শক্ত বন্ধনী এত সহজে কিভাবে ভাঙবে? বিগত এক মাস ধরে এমন স্পর্শের সাথে পরিচিত ও তবুও কেন জানি এখনও মানিয়ে উঠতে পারে নি। হঠাৎ শাড়ীর আঁচলটা সরাতেই তাঁরা শক্ত করে চাঁদের হাতটা চেপে ধরলো। মুহুর্তেই চাঁদের মুখের ভঙ্গি পালটালো। এমন রোম্যান্টিক মুহুর্তে এমন ডিসটার্ব তার মোটেও পছন্দ হলো না। সজোরে কাঁমড়ে দিলো তাঁরা'র ঘাড়ে। মুখ দিয়ে ব্যাথাকাতুর শব্দ তুলে সরে গেল। চাঁদ ও ছেড়ে দিয়েছে ওকে। তাঁরা মাথা নিচু করে ঘাড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে কেঁদে যাচ্ছে ফুঁপিয়ে। ভীষণ ব্যাথা পেয়েছে সে। চাঁদ বিরক্ত হলো। এই মেয়ে এক ফোঁটা ও রোম্যান্টিক না। লাভ বাইট দিলে কেউ এভাবে কাঁদে? এর আগেও তাঁরা'র এমন আচরণে চাঁদ বিরক্ত হয়েছে। ভেবেছে সময়ে'র সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু না তাঁরা ঠিক হচ্ছে না। এক মাস হলো বিয়ের। আর কত সময় দিবে চাঁদ? প্রথম রাত থেকেই নিয়মিত ভালোবাসা দিয়ে আসছে সে তবুও তাঁরা'র কোন হেলদুল নেই। কেমন অনুভূতিহীন ভাবে পড়ে থাকে। এভাবে কি আর রোম্যান্স হয়?
ই-বুক "অমৃতাংশু নক্ষত্র" এর অংশ বিশেষ। সম্পূর্ণ ই-বুক পড়ার লিংক কমেন্টে।